blog-img
রাজধানীতে পাথরচাপা দিয়ে ব্যবসায়ীকে হত্যার অভিযোগ
3 months ago
3.3 K Views
0 comments
রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের পাশে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে হত্যায় চারজনকে আটক করেছে র‌্যাব ও পুলিশ। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়েছে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের চার নেতাকে। নৃশংস এ হত্যার প্রতিবাদে গতকাল রাতে ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে হয়েছে বিক্ষোভ। ব্যবসায়ী সোহাগকে হত্যায় জড়িত গ্রেপ্তার চারজনের মধ্যে মাহমুদুল হাসান মহিন ও তারেক রহমান রবিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ এবং অন্য দুজনকে গ্রেপ্তার করেন র‌্যাব-১০ এর সদস্যরা। গতকাল এ তথ্য জানান ডিএমপির ডিসি (মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান। তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালের পাশে সন্ত্রাসীরা ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে কুপিয়ে ও পাথর দিয়ে মাথায় আঘাত করে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহতের বড় বোন মঞ্জুয়ারা বেগম বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে এবং রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এজাহারনামীয় আসামি মহিন ও রবিনকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় রবিনের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব এবং পূর্বশত্রুতার জের ধরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের ধরতে অভিযান চলছে। তদন্তসংশ্লিষ্টরা বলছেন, মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগের নিথর দেহ টেনেহিঁচড়ে সড়কে এনে শত শত মানুষের সামনে চলে উন্মত্ততা। সন্ত্রাসীদের আতঙ্কে কেউ এগিয়ে আসেনি। ঘটনাস্থলের একটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় নেটিজেনদের মাঝে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। একজন বলছেন, চাঁদা না পেয়ে পাথর দিয়ে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাটি আইয়ামে জাহেলিয়ার যুগকেও হার মানিয়েছে। জড়িত যেই হোক তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে। ভিডিওতে দেখা যায়, নিথর দেহ টেনেহিঁচড়ে নিয়ে আসা লোকদের মধ্যে একজন মোবাইলে কথা বলছিল। ওই সময় আরেকজন সোহাগের রক্তাক্ত মুখের ওপর কিলঘুসি দিতে থাকে। অন্য এক তরুণ দৌড়ে এসে পড়ে থাকা নিথর দেহের বুকের ওপর লাফাচ্ছিল! মানুষজনও দেখছিল এমন ভয়ংকর দৃশ্য। একজন নয়, একাধিক যুবক মৃত ব্যক্তির নাক-মুখ এবং বুকের ওপর পাথর দিয়ে আঘাত করতে থাকে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র বলছে, নিহত সোহাগ মিটফোর্ড এলাকায় ভাঙারি ব্যবসার সঙ্গে পুরোনো বৈদ্যুতিক ক্যাবল কেনাবেচা করতেন। ওই এলাকায় বিদ্যুতের তামার তার ও সাদা তারের ব্যবসার একটা সিন্ডিকেট রয়েছে। সাবেক সরকারের আমলে এর নিয়ন্ত্রণ ছিল সোহাগের কাছে। ওর কাছ থেকে ওই সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া ছিল মহিন ও টিটু। তারা ওই অবৈধ বাণিজ্যের ৫০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ চেয়েছিল। তা না হলে নিয়মিত চাঁদা দেওয়ার দাবি জানিয়েছিল তারা। এরই জেরেই দ্বন্দ্ব শুরু হয়। সেই দ্বন্দ্বে ঘটে নৃশংস হত্যাকাণ্ড। স্থানীয়রা বলছেন, নিহত সোহাগ ও হামলায় নেতৃত্ব দেওয়া মহিন, টিটুসহ জড়িত অন্যরাও ৩০ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত।

Comments 0

Your Comment